কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মেছের আলী খাঁর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করায় এক যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ওই ইউনিয়নের ঘোষপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার দুপুরে কুমারখালী থানায় এমন লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম (৪০)। তিনি চরসাদিপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ও গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আফছার আলীর ছেলে। এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার বিকেলে চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে এলাকাবাসীর একাংশ। এতে চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বয়েনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চরসাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আবু তালেব, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, যুবদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পদ্মা নদীর কারণে জেলা ও উপজেলা শহরের সঙ্গে চরসাদিপুরের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। চলাচলের একমাত্র যানবাহন নৌকা। সেজন্য সরকারি কর্তাদের নজরদারি কম। সেই সুযোগে আওয়ামী লীগপন্থী চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ পাঁচ-সাত হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে ভিজিএফ, প্রতিবন্ধি, বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড প্রদানে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি করেছেন। দলীয়করণের মাধ্যমে টিআর, কাবিখাসহ সরকারি নানা প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ লুটপাট করেছেন। তারা এই অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি জানান। চরসাদিপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসবের প্রতিবাদে গত শনিবার বিকেলে মানববন্ধন করা হয়। সেই ক্ষোভে রাতে চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ, তাঁর দুই ছেলে ফিরোজ হোসেন (৪০) ও নাজমুল হোসেনসহ আট-দশ জন মিলে আমাকে কিল ঘুষি, লাথি মারে এবং হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমি বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মেছের আলী খাঁ। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আমার পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয়। সে কেন মানববন্ধনে গিয়েছিল? তা জানতে গিয়েছিলাম। তবে মারধর করা হয়নি। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আরো বলেন, সরকার পরিবর্তন হওয়ায় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে না পেরে মনগড়া অভিযোগ করছেন। কুমারখালী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।