সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
তাবলিগের সাদপন্থি নেতা মুয়াজ বিন নূরের ছাত্রত্ব ও সনদ বাতিল দিল্লিতে ব্যাপক ধর-পাকড় অভিযান, ১৭৫ বাংলাদেশি শনাক্ত মিরপুরে কিশোর কন্ঠ মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের তরুণরা পুরো বিশ্বকে বদলে দিতে পারে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে- আলেম-ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ শীতে যেসব খাবার খেলে শিশুরা সুস্থ থাকবে কুমারখালীতে ইটভাটায় করাত কল বসিয়ে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দুর্নীতিতে কুষ্টিয়ায় উপানুষ্ঠানিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম দেশের সব ধর্মের মানুষ নিয়ে মিলেমিশে থাকব : ডা. তাহের সৌদি আরবে ‘সাদা সোনার’ সন্ধান মিলল

কুমারখালীতে চাকুরীর পাশাপাশি কোয়েল পালন করে সাড়া ফেলেছেন শিক্ষক-সাংবাদিক মাহমুদ শরীফ

ষ্টাফ রিপোর্টার / ৫৮ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:১৪ অপরাহ্ন

একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের চাকুরীর পাশাপাশি কোয়েল পাখি পালন করে সাড়া ফেলেছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিক্ষক মাহমুদ শরীফ। পারিবারিক পুষ্টি এবং আমিষের চাহিদা পূরণ করে আর্থিক ভাবে লাভবানও হচ্ছেন তিনি। শিক্ষকতা পেশায় এই কোয়েল পাখি পালনের জন্য তার কোন অসুবিধা হয়না। অনেকটা বিনোদন হিসেবে এই শখের খামারে সময় দেন তিনি। সকালে গোসলের পূর্বে ও রাতে খামারে কোয়েল পাখির পরিচর্যা এই সৌখিন খামারী শিক্ষকের রুটিন কাজ। দিনের অন্য সময় প্রয়োজন অনুযায়ী খামার দেখভাল করেন শিক্ষক মাহমুদ শরীফের স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদ শরীফ, প্রায় এক যুগ ধরে কোয়েল পাখি পালন করেন তিনি। কুমারখালী-যদুবয়রা গড়াই সেতু সংলগ্ন কেশবপুরের লালন বাজার এলাকায় নিজ বাড়ীতে এই খামার এলাকায় কোয়েলের বাড়ী বলে পরিচিতি পেয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে কোয়েল ক্রয় ও পরামর্শ নিয়ে ছুটে আসে কিশোর-যুবক, চাকুরীজীবি উদ্যোক্তারা। তিনি পরামর্শও দেন আন্তরিকতার সাথে।

রজানা গেছে, সংবাদপত্রে ২০০৫ সালে একটি প্রতিবেদন দেখে তিনি সর্ব প্রথম কোয়েল পাখি সম্পর্কে অবগত হন এই শিক্ষক। এর পর ঢাকায় প্রথম কোয়েলের ডিম দেখেন ও খেয়ে স্বাদ নেন। তখন থেকেই কোয়েল পালনের চিন্তা আসে তার মাথায়। অবশেষে একটি খামার থেকে মাত্র ২০টি কোয়েলের বাচ্চা নিয়ে এসে তিনি নিজের খামার শুরু করেছিলেন ২০১১ সালে। এর থেকেই বাস্তব অভিজ্ঞতা নেন তিনি। ব্রুডিং, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, ওষুধ, রোগ-বালাই, মোরগ-মুরগী চিহ্নিত করা, ডিম ফুটানো, হ্যাচিং, লিটার ব্যবস্থাপনাসহ কোয়েল পাখি পালনের সব বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে খামারী শিক্ষক মাহমুদ শরীফের।

সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের কথা হয় তার সাথে। তিনি খামারে কাজ করতে করতে জানালেন, পারিবারিক আমিষের পুষ্টি মেটাতে আর ভালোলাগার থেকে কোয়েল পালন করছি। শিক্ষকতার মাঝে এই পাখি পালনে তেমন সমস্যা, কষ্ট বা অসুবিধা নেই। সকালে ও রাতে মাত্র দুইবার খাদ্য ও পানি দিতে হয়। সন্ধায় ডিম সংগ্রহ করা আনন্দের কাজ। যে কেউ বাসা-বাড়ীতে সহজেই এই কোয়েল পালন করতে পারে। শিশুরা কোয়েলের ডিম আগ্রহের সাথে খায়। কোয়েলের মাংশেরও আলাদা টেষ্ট ও ফ্রেবার আছে বলেও তিনি জানান।

সৌখিন কোয়েল খামারী শিক্ষক মাহমুদ শরীফ আরো বলেন, কোয়েল পালনের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন অতি জরুরী। ডিম ফোটানোর হ্যাচিং থেকে শুরু করে ব্রæডিং আর রাতে আলোর জন্য বিদ্যুতের বিকল্প নেই। রাত দিনে ১৬ ঘন্টা আলো অবশ্যক। কোয়েলের খাদ্য প্রতিদিন ১৫-২৫ গ্রাম প্রয়োজন হয়। খাদ্যে কার্পন্ন করলে ডিম উৎপাদন ও বৃদ্ধিতে ব্যঘাত হয়। তিনি বলেন, ৩৫ দিনে মোরগ পাখি খাওয়ার উপযোগী হলে বিক্রি করি। ৪২-৬০ দিনে মুরগী ডিম দেওয়া শুরু করে। শীতকালে ডিমের চাহিদা বেশি থাকে। পাইকারী হিসেবে ৩০০-৩২০ টাকায় ১শ ডিম বিক্রি হয়। মোরগ কোয়েল মাংশের জন্য বয়স ভেদে ৪৫-৭০ টাকায় বিক্রি হয় সচারচর।

শিক্ষক মাহমুদ শরীফ নতুন খামারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, অল্প পুঁজি অল্প লাভ মনে করে শুরু করতে হবে। বাজারজাত করার বিষয়টি সবার আগে মাথায় রাখা জরুরী। স্থানীয় বাজারে ব্যাপক ভাবে কোয়েল খাওয়ার প্রচলন এখনো শুরু হয়নি। তাই ভেবে চিন্তে খামার করা উচিৎ। তবে পারিবারিক পুষ্টির জন্য হলে কোন সমস্যা নেই। তিনি বলেন, কোয়েলের রোগবালাই নেই বললেই চলে। পোল্ট্রি শিল্পের এই ক্ষুদ্র খাত টিকিয়ে রাখতে রেডি ফিডের মূল্য কমানো এখন জরুরি। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও ৫০-১০০ কোয়েল পাখি পালন করে সহজেই তার নিজের খরচ চালিয়ে যেতে পারে। খাচা ও লিটার দুই পদ্ধতিতে কোয়েল পালন করা যায়। অল্প জায়গাতে খাচায় পালন করা গেলেও নিয়মিত পরিস্কার বিড়ম্বনার। সেক্ষেত্রে লিটার পদ্ধতি সুবিধাজনক।

ব্যবসায়ীক খামারী হিসেবে ৫০০ জিরো বাচ্চা থেকে পালন করলে মাসে কত টাকা আয়/লাভ হওয়া সম্ভব? এমন প্রশেন্ন জবাবে তিনি জানান, ব্রæডিংকালে বাচ্চা মারা যাওয়ার উপর এটা নির্ভর করে। তবে ৩/৪ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সব কিছু নির্ভর করে বাজারজাত করণের উপর। এই শিল্পে বাটপারীও কম হয়না বলেও তিনি সতর্ক করেন। বিশেষ করে অনলাইনে বাটপারী বেশি হয়। কোয়েল পাখির বয়সের ক্ষেত্রে মিথ্যার সুযোগ নেয় অনেকেই। তাই, নতুনদের আর্থিক লেনদেনে সতর্ক থাকা আবশ্যক। এই সৌখিন খামারীর সাথে যোগাযোগ- ০১৭১৭ ৫১২৬০০ কুমারখালী, কুষ্টিয়া ।


এ জাতীয় আরো খবর ....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর