মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
কুমারখালীর তৈরি পরচুলা বিদেশে রপ্তানি ; অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে গ্রামের নারী শ্রমিকরা শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন তাবলিগের সাদপন্থি নেতা মুয়াজ বিন নূরের ছাত্রত্ব ও সনদ বাতিল দিল্লিতে ব্যাপক ধর-পাকড় অভিযান, ১৭৫ বাংলাদেশি শনাক্ত মিরপুরে কিশোর কন্ঠ মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের তরুণরা পুরো বিশ্বকে বদলে দিতে পারে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে- আলেম-ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ শীতে যেসব খাবার খেলে শিশুরা সুস্থ থাকবে কুমারখালীতে ইটভাটায় করাত কল বসিয়ে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দুর্নীতিতে কুষ্টিয়ায় উপানুষ্ঠানিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম

কুষ্টিয়াসহ সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য উর্দ্ধমূখী – জনজীবন বির্পযয়

অনলাইন ডেক্স / ২১ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪, ৮:৫০ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়াসহ সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য উর্দ্ধ মূখী হাওয়ার কারণে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জনজীবন বিপর্য়ের মুখে পড়েছে। আয়ের তুলনায় দ্রব্যের মূল্য বেশী হাওয়ার কারনে জীবন নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে দিন মুজুর এবং বেসরকারী চাকুরী জীবিদের জীবনযাত্রায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেশী প্রভাব ফেলেছে। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য উর্দ্ধ মূখী হাওয়ার প্রধান কারণ হিসাবে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন সাধারন ক্রেতারা।

গতকাল রবিবার (২০ অক্টোবর) কুষ্টিয়া ও আশে পাশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা থেকে সাড়ে ১২ টাকা পর্যন্ত। মসুরের ডাল প্রতি কেজির দাম ১২৫ টাকা, কলায়ের ডালের দাম প্রতি কেজি ১৮৫ টাকা। বাজারে মোটা চাউলের দাম স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও মিনিকেট চাল প্রতি কেজির দাম ৬৮ থেকে ৭০ টাকা এবং কাজললতা চালের কেজি ৬২ থেকে ৬৫ টাকা। এছাড়াও প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭০ টাকা এবং বতলজাত সয়াবিন তেলের কেজি ১৬৫ টাকা।সরেজমিনে কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কম হলেও তা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে। কুষ্টিয়ার কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে। শ্রেণী ভেদে প্রতি কেজি রসুনের দাম ২২০ থেকে ২৩০ টাকা।

বর্তমান বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি কেনার উপায় নেই। প্রতি কেজি কচুর দাম ৬০,পটল ৫০ টাকা কেজি এবং ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি বেগুণ। এছাড়াও প্রতি কেজি শসার দমি ৬০ টাকা, প্রতি কেজি ঢেঁড়শের দাম ৫০ টাকা এবং প্রতি কেজি পেঁপের দাম ৪০ টাকা। অন্যদিকে প্রতি কেজি ফুলকপির দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, প্রতি কেজি সিমের দাম ১৮০ টাকা, প্রতি কেজি মূলার দাম ১০০ টাকা এবং প্রতি কেজি টমোটোর দাম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। এছাড়াও প্রতি কেজি লাল শাকের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পুঁইশাক প্রতি কেজির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি কেজি পালং শাকের দাম ১০০ টাকা, প্রতি কেজি ডাটা শাকের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি মূলা শাকের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা।এদিকে সবজির বাজার কিছুটা কমলেও মাংসের বাজার রয়েছে অপরিবর্তিত।

বাজারে প্রতি কেজি দেশী মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে, সোনালী মুরগী প্রতি কেজির দাম ৩০০ টাকা এবং বয়লার মুরগী প্রতি কেজির দাম ২০০ টাকা। এছাড়াও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং প্রতি কেজি খাসির মাংসের দাম হাজার হাজার টাকা।মাংসের বাজারের মত মাছের বাজার গতসপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম মধ্যে থাকলেও তা আরো অনেক আগেই সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় আকারের রুই মাছের দাম ৩২০ টাকা এবং প্রতি কেজি ছোট আকারের রুই মাছের দাম ২৫০ টাকা। এছাড়ও বড় আকারের পাঙ্গাস মাছ প্রতি কেজির দাম ৩০০ টাকা এবং প্রতি কেজি ছোট আকারের পাঙ্গাস মাছের দাম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। অন্যদিকে প্রতি কেজি সিলভার কার্প মাছের দাম ১৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছের দাম ১৮০ টাকা।

অনান্য মাছের তুলনায় বাজারে পাঁচ মিশালী ও কাচকী মাছের দাম কিছুটা চড়া। প্রতি কেজি কাচকী মাছের দাম ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা।কথা হলে কুষ্টিয়া পৌর বাজারের সবজি বিক্রেতা বলেন, সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলায় অনেকটা কমেছে। গত সপ্তাহে যে সব ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে তা আজ (গতকাল) ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমার কারণে বর্তমানে বাজারে ক্রেতা কিছুটা বেশি। তবে আশা করি সামনের দিন গুলোতে সবজির দাম আরো কমবে।কুষ্টিয়া পৌর বাজারের মাংস বিক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, মুরগীর মাংসের বাজার আগের থেকে কিছুটা উর্দ্ধমূখী। সামনে মুরগীর মাংসের দাম আরোও বাড়তে পারে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এদিকে পৌর বাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, গতবার যে দামে সোনালী এবং বয়লার মুরগী কিনেছিলাম আজ প্রতি কেজিতে তার থেকে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশী দামে কিনতে হয়েছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে না খেয়ে থাকা লাগবে। জিনিস পত্রের দাম বাড়লেও রোজগার আগের মতই রয়েছে। অবিলম্বে বাজার মিনটরিং করে দ্রব্য দাম সাধারন মানুষের হাতের নাগালে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান এই ক্রেতা।পৌর বাজারের গুরুর মাংসের ব্যাবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আগামী মাংসের দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, গোখাদ্যে দাম বেশী হওয়ার কারণেই এমন অবস্থা। আগামীতে গুরুর মাংসের দাম আরো বাড়তে পারে বলেও তিনি জানান।গুরুর মাংসের মতই খাসির মাংসের বাজারে একই অবস্থা বিরাজ করছে। জানতে চাই পৌর বাজারের খাসির মাংসের ব্যাবসায়ী বলেন, সামনের দিনে খাসির মাংসের দাম আরও বাড়বে।

কারণ হিসাবে তিনি বলেন, সামনে শীত আসছে। আর শীতের সময় বিয়ে, সুন্নতে খাৎনা সহ অনান্য অনুষ্ঠান বেশী হয়। সেই কারণে খাসির মাংসের দাম বাড়া ছাড়া কমার সম্ভাবনা নেই।অবশ্য পৌর বাজারের মাছ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে সামনের দিকে মাছ দাম কমবে বলে তারা আশ^স্ত করেন। এদিকে কুষ্টিয়া পৌর বাজারে বাজার করতে আসা একাধিক ক্রেতার সাথে কথা হলে তারা কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে দায়ী করে বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদের হচ্ছা মত দাম হাকাচ্ছেন। দেখার কেউ নেই। জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন।

দীর্ঘ দিন তাদের তেমন কোন কর্মকান্ড চোখে পড়ে না। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা উচিৎ বলেও তারা জানান।কুষ্টিয়া জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, জেলার বাজার মনিটরিং এর জন্য জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ সহ মোট ১১ সদস্য বিশিষ্ট সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, কুষ্টিয়ার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম, কুষ্টিয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু রাসেল, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আল-ওয়াজিউর রহমান, জেলা ট্রেনিং অফিসার ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল বারী, অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) টিপু সুলতান সপন, সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ সুজাত হোসেন খান, ক্যাব কুষ্টিয়ার সভাপতি নাফিজ আহমেদ খান টিটু, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজর ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক সবুজ হোসেন এবং জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল।

তবে ১১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির সদস্যদের কাউকে বাজার মনিটরিং জন্য কোন ভূমিকায় দেখা গেছে বলে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় নাই।বাজার মনিটরিং এর বিষয়ে জানতে জেলার বাজার মনিটরিং সদস্য আল-ওয়াজিউর রহমান ও নাফিজ আহমেদ খান টিটু’র মোবাইল ফোনে ফোন করেও তাদের পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই জেলার বাজার মনিটরিং বিষয়ে তাদের ভূমিকা কি, সেই বিষয়েও জানা সম্ভব হয়নি।বাজার মনিটরিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং করতে প্রতিদিনই বের হচ্ছি। কুষ্টিয়া জেলা অনেক বড় হওয়ার কারণে এবং জনবল স্বল্পতার কারণে সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।


এ জাতীয় আরো খবর ....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর