বাংলাদেশের তরুণরা পুরো বিশ্বকে বদলে দিতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “আমি আশ্বস্ত করছি, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। দেশের তরুণ সমাজ ধর্ম নিয়ে খুব পক্ষপাতহীন। তারা বাংলাদেশকে নতুন করে গড়তে চায়। আর এই তরুণরা পুরো বিশ্বকে বদলে দিতে পারে। এটি কেবল একটি দেশ বা অন্য দেশ পরিবর্তনের বিষয় নয়। বাংলাদেশ যা করেছে, এটি তরুণরা কতটা শক্তিশালী তার একটি উদাহরণ।”
দ্য ইকোনমিস্টের ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশের খেতাব জিতেছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে সুখী বা ধনী নয়, বরং গত ১২ মাসে কোন দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেই বিচারে বর্ষসেরা দেশ বেছে নেওয়া হয়। বাংলাদেশকে বর্ষসেরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং বাংলাদেশে নতুন যাত্রা শুরুর বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার নেয় সাময়িকীটি।
তরুণরা কতটা শক্তিশালী, সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থান এর একটি উদাহরণ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের উচিত তরুণদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে তরুণীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের যেকোনো তরুণের মতো তারা সামনের কাতারে ছিলেন। আমাদের তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয়, তা নিশ্চিত করা উচিত।”
ড. ইউনূস বলেন, “যোগ্যতার দিক দিয়ে বাংলাদেশের তরুণেরা কোনো অংশে কম নন। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তিনজন তরুণকে অন্তর্বর্তী সরকারে যুক্ত করা হয়েছে। তারা এখন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং অসাধারণ কাজ করছেন। তারা বিগত শতাব্দীর নন, বরং এই শতাব্দীর তরুণ।”
বাংলাদেশের নির্বাচনের পর কী করতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “আসলে আমাকে আমার কাজ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। জোর করে এই কাজে আমাকে যুক্ত করা হয়েছে। আমি আমার কাজ করছিলাম এবং তা উপভোগ করছিলাম। এ কারণেই আমি প্যারিসে ছিলাম। আমাকে ভিন্ন কিছু করার জন্য প্যারিস থেকে সরিয়ে আনা হয়। সুতরাং আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। আর তরুণরাও এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আবার সেই কাজে ফিরে যাব, যেটা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।”