কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সবধরনের চালের দাম কেজিতে এক টাকা করে কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন সরু চালের বৃহত্তম মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের চাল ব্যবসায়ীরা। গতকাল বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম খাজানগরের চালকল মালিকরা। কুষ্টিয়ায় দফায় দফায় চালের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ মতবিনিময় সভা আহ্বান করা হয়। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আখতার, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল-ওয়াজিউর রহমান, কৃষি অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল উপস্থিত ছিলেন।
এসময় চালকল মালিকদের মধ্যে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান বলেন, ‘আজ (১৯ ডিসেম্বর) থেকেই মিলগেটে সবধরনের চালের দাম কেজিতে এক টাকা কমানো হবে। যে যে দামে বিক্রি করছিলেন সেখান থেকে এক টাকা কম রাখবেন। এসময় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, চালের দাম বাড়লে সবার কষ্ট হয়। কী কারণে চালের দাম বাড়ছে এগুলো আমরা অ্যানালাইসিস করে দেখতে চাই। এসময় ডিসি চালকল মালিকদের কাছে জানতে চান, আজকে ধানের দাম বাড়লে আপনারা কীভাবে সঙ্গে সঙ্গে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এটাতো বাড়লে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর বাড়ার কথা? তিনি আরও বলেন, আপনারা চালের দাম বাড়ার জন্য করপোরেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন। কিন্তু আমার কাছে তথ্য আছে কুষ্টিয়ার খাজানগরের চালকল মালিকদের মধ্যে কয়েকজন এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে। খোঁজখবর নিচ্ছে। মোবাইল কোর্ট হবে না।
অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল-ওয়াজিউর রহমান বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে কোনো না কোনো ব্যবসায়ী এই করপোরেট গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বের হন। আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। গেল দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কুষ্টিয়ার খাজানগর মিলগেটে প্রতিকেজি চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়ে যায়। আর খুচরা বাজারে সবধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়ে যায় চার টাকা। এ অবস্থায় চালকল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান। এর আগে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি চালকল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিনিকেট (সরু) চালের দাম ৬২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক। দফায় দফায় দাম বাড়তে বাড়তে এখন মিলগেটে মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৪ টাকা কেজি। সে হিসেবে গত ১০ মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮-১০ টাকা। মতবিনিময় সবাই খাজানগরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেশ এগ্রোর এমএ খালেক, স্বর্ণা রাইস মিলের মালিক আব্দুস সামাদ, দাদা রাইস মিলের জামশেদ আলী, গোল্ডেন রাইস মিলের জাহিদুজ্জামান জিকু, চিশতিয়া রাইস মিলের মালিক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।