চালকল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণেই কুষ্টিয়ায় চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই বলে অভিযোগ তুলছেন ক্রেতারা। গত ২-৩ দিনের ব্যবধানে কুষ্টিয়ার বাজারে সব ধরনের চাল বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা বৃদ্ধিতে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ নেই স্থানীয় প্রশাসনের। আওয়ামী সরকারের শাসনামলে মিলাদের কিছু অনিয়ম সাবেক মন্ত্রীর চোখে ধরা পড়লে কয়েকজন মিলারকে জরিমানা ও গুদাম সীল করা হয়। সে সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিনিকেট (সরু চাল) প্রতি কেজি ৬২ টাকা বিক্রির নির্দেশ দিলেও তখন তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি কুষ্টিয়ার চালের বাজারে।
তার পর থেকে এখনো সব ধরনে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। সাধারণ ভোক্তারা অভিযোগ তুলেছেন চালের বাজার সঠিক ভাবে মনিটরিং না কারায় চালের বাজার কমছে না। মিল মালিকদের সিন্ডিকেট এই দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী। গতকাল মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে কুষ্টিয়ার বড় বাজার ও পৌর বাজার এলাকার চাল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, চালের বাজার এখনও ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে রয়েছে। মিনিকেট সাধারণ চাল (সরু চাল) বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৭০ টাকা বস্তা। ভোক্তারা জানান, সরকারের সকল পদক্ষেপ ভালো হলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। যার কারণে বাজারে একের পর এক চালের দাম বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। দিনমজুর আক্কাচ আলী কুষ্টিয়া পৌর বাজারে চাল কিনতে এসে বলেন, চালের দাম কমতে দেখছি না। আমরা যা আয় করি তা দিয়ে চাল কিনবো না অন্য কোন বাজার করবো। বাজারে চালের যে দাম চাল কেনায় কষ্ট হচ্ছে। চাল ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, মিল গেটে চালের দাম না কমানো হলে বাজারে দাম কমবে কি করে।
আমরা যে দামে মিল থেকে চাল ক্রয় করছি তা থেকে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা লাভে বিক্রি করছি। কুষ্টিয়ার খাজানগর চালের মোকামের রশিদ অ্যপগ্রোর মালিক আব্দুর রশিদ জানান, বর্তমানে সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দামও একটু বেড়েছে। নতুন ধান বাজারে আসলে আগামী ১৫-২০ দিন পর চালের দাম কিছুটা হলেও কমে আসবে। এখন সকল মিলেই ধান সংকট চলছে। তিনি বলেন, ধানের অভাবে অনেক মিল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়ছে। তবে কুষ্টিয়া পৌর বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামের রশিদ অ্যাগ্রো, জাফর রাইচ মিল, জামসের রাইচ মিল, আহাদ রাইচ মিল, প্রগতি রাইচ মিল, দাদা রাইচ মিল, দেশ অ্যাগ্রো ও ফ্রেশ অ্যাগ্রো কুষ্টিয়ায় চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এরা যদি চালের দাম মিলগেটে কমিয়ে দেয় তা হলে বাজারে চালের দাম কমে যাবে। তারা তো দাম কমাচ্ছে না বরং দিনে দিনে চালের দাম বাড়িয়ে চলেছে। কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তারা বলেন, আমরা লাইসেন্স অনুসারে খাদ্য মজুদ করা হচ্ছে কিনা তা তদারকি করছি। জেলার মিল এবং পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কোন রকমের কারসাজি করছে কী না সেটা দেখা হচ্ছে। যদি কেউ করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।