ভারতের এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে ‘বোমা আতঙ্ক’ ছড়িয়ে পড়েছে। একের পর এক হামলার হুমকি আসছেই। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে এই হুমকি। অন্তত ৭০টি উড়োজাহাজে বোমা থাকার হুমকি এলেও একটিতেও হামলা হয়নি। কিন্তু বাধ্য হয়ে ফ্লাইট সরিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে কিংবা বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করতে হয়েছে। করতে হয়েছে জরুরী অবতরণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি পাচ্ছে ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলো। গত ৬ দিনে অন্তত ৭০টি উড়োজাহাজে বোমা থাকার হুমকি মিলেছে। গতকাল শনিবার একদিনেই অন্তত ৩২টি ফ্লাইটে বোমার হুমকি পাওয়া যায়।
ভুয়া হলেও লাগাতার বোমা হামলার হুমকিতে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে যাত্রীদের মধ্যে। এয়ারলাইন্সগুলোর পাশাপাশি উদ্বিগ্ন ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রণালয়ও।
এ সংকট কাটাতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতের সিভিল এভিয়েশন বিষয়ক মন্ত্রী মুরলিধর মহল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি টিভি১৮ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে, ব্যুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস) ও ইন্টিলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এই সংকট সমাধানে এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে।
কারা এসব হুমকি দিচ্ছেন? এ নিয়ে সিভিল এভিয়েশন বিষয়ক মন্ত্রী মুরলিধর মহলের কাছে জানতে চায় সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি টিভি১৮। তিনি বলেন, এসব হুমকির ৭০-৮০ শতাংশ আসছে ভারতের বাইরে থেকে। তবে দেশের ভেতর থেকেও হুমকি আসছে। সেগুলো চিহ্নিত করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ভারতীয় এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উড়োজাহাজে বোমার হুমকিদাতাদের অবস্থান দেশের বাইরে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ হুমকিদাতার আইপি বা ইন্টারনেট প্রটোকল অনুযায়ী অবস্থান যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডা ও আমেরিকা। এ ছাড়া হুমকিদাতারা নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াতে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করছেন।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবার ভারতের বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে দেশটির এভিয়েশন সেফটি সংস্থা ব্যুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস)। বৈঠকে ‘বোমা আতঙ্ক’ মোকাবিলায় এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোকে এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিমালা বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের এই পরামর্শ মানতে গেলে বিপত্তির মুখে পড়তে হতে পারে এয়ারলাইন্সগুলোকে। কারণ উড্ডয়নের আগে বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রীদের শরীর ও মালামাল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশি করতে গেলে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হবে এয়ারলাইন্সগুলোর। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে পারে।